জমিতে সরিষা আবাদ আগ্রহভরে চাষ করছে কৃষকেরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীতের মাঝামাঝি সময়ে সরিষা ফুলে হলুদে হলুদাভ হয়ে ওঠেছে চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জ। কম খরচে বেশী লাভ হওয়ায় কৃষকেরা আগ্রহভরে চাষ করছে সরিষা। তবে বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে জেলায় গত বছরের চেয়ে কম জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এ বছর সিরাজগঞ্জ জেলায় ৪৮ হাজার ৫ শত ৬০ হেক্টর জমিতে সরিয়ার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৭ হাজার হেক্টর কম জমি।

জানা যায়, শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জ। ইরি আর বোরো ধান কাটার পরই সিরাজগঞ্জের কৃষকরা সরিষার চাষ শুরু করেন। চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে এখন শুধইু হলুদ রঙ। কোথাও ফুলে রঙ আসা শুরু করেছে-কোথাও গাঢ় রঙ ধারন করেছে। মূলত বারি-১৪ ও মাঘি জাতের সরিষা চাষ হয় এ অঞ্চলে। সরিষার তেলের পাশাপাশি খৈল পাওয়া যায়। এছাড়া মধু চাষীদের কাছে মাঠ ভাড়া দেয়া যায়। সব মিলিয়ে ফলন ভাল হলে লাভবান হওয়ার আশা করছে কৃষকরা।

মহিষলুটি এলাকার কৃষক হারুন জানান, ধানকাটার পরই ৫ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। বিঘাপ্রতি প্রায় দুই হাজার টাকার খরচ হয়েছে। ভাল ফলন হলে ৩০ মণ শস্য উৎপাদন হবে। এতে মোটামুটি ভাল লাভ হবে।

একই এলাকার কৃষক শাহজাহান আলী জানান, সরিষার আবাদের লাভের টাকা দিয়ে অনায়াসে পরবর্তী ফসল ধান চাষ করা হয়। এটা কৃষকের বাড়তি আয়। কৃষক নিয়াজ উদ্দিন জানান, সরিষা থেকে তেল ও খৈল পাওয়া যায়। খৈল গরু এবং মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

তবে এ বছর পরপর দুবার বন্যা, বৃষ্টি ও অপরিকল্পিত পুকুর খননের কারণে পানি নিস্কাশন হতে না পারায় এ বছর তাড়াশ ও সলঙ্গায় প্রায় সাত হেক্টর জমিতে সরিষা উৎপাদন ব্যহত হয়েছে। এতে ওই অঞ্চলের কৃষকেরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।  এখন পর্যন্ত পানি নিস্কাশন না হওয়ায় ধান আবাদ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে।

সলঙ্গার আগুরপুর-ঝুরঝুড়ি এলাকার কৃষক জুড়ান আলী জানান, জলাবদ্ধতার কারণে সরিষা চাষাবাদ করতে পারেনি। আগামীতে ধান চাষাবাদ নিয়েও শঙ্কায় রয়েছি।

তাড়াশের কৃষক মুনজুর হাজী জানান, যত্রতত্র জমির মধ্যে পুকুর কেটে পানি নিস্কাশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আগে যে সমস্ত খাল দিয়ে পানি নিস্কাশন হতো সব খাল দখল করে বসতবাড়ী নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে জমি থেকে পানি বের হতে না পরায় সরিষা আবাদ তো দুরের কথা আগামীতে ধান চাষ নিয়েও শঙ্কায় রয়েছি।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, অপরিকল্পিত পুকুর খনন, খাল-জলাশয় ভরাট ও সুতিজাল দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধের কারণে সরিষা আবাদে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। এ বছর অর্ধেক জমিতে সরিষা আবাদ না হওয়া কৃষকের বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী জানান, বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে সরিষার আবাদ কম হলেও ফলন ভাল হওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর